শুক্রবার, ২২ অগাস্ট ২০২৫, ১০:৫৮ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি:: কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে চরম ভোগান্তিতে দিন কাটছে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা, মোলাশীকান্দা ও হাসনাবাদ খ্রিস্টান পল্লীর বাসিন্দারা। নিচু রাস্তার পাশ দিয়ে নেই কোনো ড্রেনেজ ব্যবস্থা। যে কারণে এ এলাকার তিনটি গ্রামের কয়েক শত পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বারবার জনপ্রতিনিধি পরিবর্তন হলেও তাঁদের ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। এতে মানবেতন জীবনযাপন করতে হচ্ছে প্রায় দুই শতাধিক পরিবারকে।
সরেজমিনে হাসনাবাদ ও মোলাশীকান্দা গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টি পানি পুকুর উপচে রাস্তা ডুবে গেছে। লোকালয়ে বসত বাড়ীতেও পানির কমতি নেই।
স্থানীয় সুমা মৃধা বলেন, তাঁদের বাড়ির উঠানে পানি। শুধু ঘর ডুবে যায়নি। চেয়ারম্যান মেম্বাররা নিচু রাস্তা করেছে। পানি সরতে না পারায় পুরো এলাকাই ডুবে গেছে।
স্কুল শিক্ষক আবু তাহের বলেন, হাসনাবাদ থেকে বান্দুরা হলিক্রস স্কুলে আসতে রাস্তায় হাঁটার উপায় নেই। খানা খন্দ ও গর্ত থাকায় রিকসা চলারও উপায় নেই। ফলে স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছেন। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এ দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত নিরসন দরকার।
জলাবদ্ধতায় দুর্ভোগে বান্দুরা খ্রিষ্টান পল্লী
খেজুরবাগ এলাকার অটোরিক্সা চালক জোনাবালী বলেন, এ তো নতুন কিছু না। বছরের প্রায় ৫/৬ মাসই পানি থাকে খ্রিষ্টান পল্লীতে। ইছামতি নদীর সাথে খালগুলো ভরাট করায় এমন হয়েছে।
হাসনাবাদের বাসিন্দা সেলেস্টিন রোজারিও বলেন, বছরের অর্ধেক সময় আমরা পানিতে আবদ্ধ থাকি। এবারের টানা বৃষ্টিতে ভোগান্তি আরো বেড়েছে। বাজার যেতে গেলে আমাদের পানি মাড়িয়ে যেতে হয়। এছাড়া দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতা থাকায় পানিও পচে গেছে। পানি শরীরে লাগলেই চুলকানি শুরু হয়। এ খ্রিষ্টান নাগরিক আরো বলেন, আমাদের গ্রাাম ঘেষেই ইছামতি নদী। যদি পরিকল্পিতভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা যায় তাহলেই মুক্তি মিলবে।
একই এলাকার রানু গমেজ বলেন, আমাদের ভোগান্তির কথা বলে শেষ করা যাবে না। সারা বছরই পানির নিচে থাকি। প্রতি রোববার আমাদের গির্জায় প্রার্থনা থাকে। ময়লা পানির কারণে গির্জায় যাওয়া যায় না। তাই এখন প্রতি সপ্তাহে যেতেও পারি না।
শিক্ষার্থী অর্ণব ডি কস্তা বলেন, স্কুলে যেতে নানা বিপাকে পড়তে হয়। জুতা হাতে নিয়ে প্যাণ্ট হাটু পর্যন্ত তুলে স্কুলে যেতে হয়। এ রাস্তাটি আমাদের জন্য খুবই দুর্ভোগের। এ থেকে আমরা মুক্তি চাই।
এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ প্রকৌশলী মো. জুলফিকার হক চৌধুরী বলেন, ওই এলাকা আমি পরিদর্শন করেছি। খুবই জটিল অবস্থা তৈরী হয়েছে। পানি সরানোর কোনো রাস্তা নেই। কমিউনিটির লোক গুলোকে উদ্যোগ নিতে হবে। নদীর সাথে কিভাবে সংযোগ করা যায়। তাহলে আমরা বাকি কাজ করতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবো।